ভারতে জঙ্গি হামলার ষড়যন্ত্র, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার প্রস্তুতি এবং ভুয়া ভারতীয় পরিচয়পত্র রাখার অভিযোগে পাঁচ বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কলকাতার একটি সেশনস কোর্ট। নয় বছর দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক রোহন সিংহ।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স—এসটিএফ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে প্রমাণের অভাবে এক অভিযুক্ত, আব্দুল কালামকে খালাস দেওয়া হলেও বাকি পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আনোয়ার হোসেন ফারুক, মো. রুবেল, মাওলানা ইউসুফ শেখ, মো. শহিদুল ইসলাম, জাবিরুল ইসলাম
আদালত জানায়, তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০-বি, ১২১, ১২১-এ, ১২২, ১২৩ এবং ১২৪-এ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহ, ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার মতো গুরুতর অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি আইন (Foreigners Act) এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইন (Explosive Substances Act) অনুযায়ীও তাদের দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মাওলানা ইউসুফ শেখের ভূমিকা ‘সাবভার্সিভ অ্যাকটিভিটিজ’-এ বেশি গুরুতর হওয়ায় তাকে ১২১এ ধারায় অতিরিক্ত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এসটিএফ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে ভুয়া ভারতীয় নথি, বিস্ফোরক তৈরির উপকরণ ও যোগাযোগের রেকর্ড উদ্ধার করা হয়। তদন্তে আরও জানা যায়, তারা জেএমবি—জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের সদস্য এবং ভারতের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে বোমা হামলার পরিকল্পনা করছিল।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ, বসিরহাট এবং আসামের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে এসটিএফ। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনজন ভারতের বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
দীর্ঘ নয় বছর পর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো, যা ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জন্য একটি বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।